অকলুষের অকরুণ অংশক............(নিষ্প্রভ এক গোধূলী বেলার দ্বিতীয় পর্ব)
-হ্যালো
-হাই
-কথা বলতে পারি?
-জ্বী,অবশ্যই
-আপনার নাম?
-তন্দ্রা
-কীসে পড়েন?
-ইন্টারমিডিয়েট দ্বিতীয় বর্ষ ।
-ও
-আচ্ছা,আপনার কোনো ছবি নেই কেনো?
-ফেইক আইডি তাই!
-আহা,ক্ষেপছেন যে!আমি তো ফেইক আইডি বলিনি।
-ছবি দেয়া আর কমদামী পণ্যের জন্যে ব্যবসায়ীদের
হাক ছেড়ে ক্রেতা ডাকা আমার কাছে এক জিনিস।
-হুম ,বুঝলাম
-ভালো থাকবেন,আনফ্রেন্ড করে দিচ্ছি………দুঃখিত
-আচ্ছা
-রাত বাজে ৩:০০ টা আপনি ঘুমান না?
-রাতে ঘুমাই না।
-অদ্ভুত।
-হু
-আমার সম্পর্কে প্রশ্ন নেই?
-না
-আমি অনিরুদ্ধ।
-ভালো
-আপনি আমার জুনিয়র,তাইনা?
-তুমি করেই বলেন,ইনফোতে দেয়া আপনি ডিবেটিং করেন!
-এটায় ই পার করলাম সারাজীবন !(দম্ভ নিয়ে)
-শিখাবেন?
এভাবেই শুরু হয় অসম প্রেমের প্রথম পথচলা।তারপর সেই শেখানোটা ,শেখানোতেই আটকে থাকেনি,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হওয়া,দূরালাপনীর বিশেষ একটা অবদান,নাম্বার প্রদান এবং কথা আদান……
তারপর কথার মেলা বসানো……
আগ্রহটা অবশ্য অনিরুদ্ধর ,
তন্দ্রা নির্বিকার।সব সময়ের মতো।
-আচ্ছা তন্দ্রা ,বাসা কোথায় তোমার?কখনো জিজ্ঞেস করিনি।
-(………)এর কাছাকাছি।
-আমারো
-হু
চারকোণা যন্ত্রের পেছনে বসে দুজনে একই মিথ্যা বলে,তারা দুজন হয়ত জানতোই না কাকতালীয় হলেও দুজন একই এলাকার বাসিন্দা,রাস্তার এপার আর ওপার হবে তাদের দূরত্ব।
-ভাইয়া
-হ্যা,বলো
-ভালো আছেন?
-হ্যা,তুমি?
-সব সময় ভালো থাকি
-একটা প্রশ্ন করতে পারি?
-করেন?
-তোমার প্রেমিক,কিংবা বয়ফ্রেন্ড নেই?
-ছিলো
-এখন নেই?
-না
-কতোদিনের?
-এক বছর সাত মাস
-এতো দিন!তা এখন তাহার অনুপস্থিতির কারণ?
-আমি রাখছি,পরে কথা হবে।
মুখের উপর ফোন রেখে দেয়াটা তন্দ্রার স্বভাব।চুপচাপ ছাদে চলে যায় তন্দ্রা।মই দিয়ে ছাদের পানির ট্যাংক টার উপরে উঠে পা ঝুলিয়ে বসে,এখান থেকে পুরো এলাকাটা দেখা যায়,দূরে দাঁড়ানো বিশাল ইমারত গুলো যেন কতো বছরের কতো দিনের কষ্ট ধারণ করে আছে।নীরবে তাকিয়ে থাকে সে।এটা তন্দ্রার প্রিয় জায়গা।মন খারাপের সময় গুলো সে এখানে কাটিয়ে দিয়েছে কখনো সিগারেটের ধোয়ার সাথে,কখনো বৃষ্টির সাথে,কখনো মেঘ মুক্ত আকাশের গোল থালার মতো চাঁদের সাথে।গা এলিয়ে দেয় তন্দ্রা……………তন্দ্রালু ঝাপসা চোঁখে সে পুরনো গল্প দেখে…………
-এই,তন্দ্রা
-কী?
-তাকাও
-পারবোনা,ব্যস্ত আমি
-আরে ,তাকাও তো
-ধুর,কী?হয়েছেটা কী?
-গ্লাসে দেখো
-তো?
-তুমি আর আমি!
-ধুর,তো?
-সুন্দর না?
-আন্ডা……ভাগো
সব সময়কার মতো রাস্তার যে পাশ দিয়ে গাড়ি যায়,তন্দ্রা সে পাশেই হাঁটছে,সামনে পেছনে ,আশে পাশে খেয়াল নেই,একমনে মেঘ দেখে যাচ্ছে………।
-এই তন্দ্রা!
-ক……কী!
-মরতে চাও নাকি?
-না……নাহ
-এভাবে হাঁটছো কেনো তাহলে?
-চুল উড়ছে,একটা অন্য রকম অনুভূতি ও তুমি বুঝবেনা।
-চুল শুদ্ধ তোমায় উড়িয়ে নিয়ে যেতো ,যত্তসব
টেনে হিচড়ে তন্দ্রা কে তাসরীফ এগিয়ে নিতে থাকে,সব সময় এমন ভাবেই আগলে রাখে।যেন কোনো কিছুই তাকে স্পর্শ করতে না পারে।
-এই নাও,স্যরি দেরি হয়ে হলো।
-কী?
-আইসক্রিম
-হিহিহি
-চকলেট ফ্লেভার,দাঁত না দেখিয়ে খাও
তাসরীফের বদ অভ্যাস হলো তন্দ্রাকে বাড়ি পৌছে দেয়া,তন্দ্রাও কিছু বলেনা,ওর মাতব্বরি তন্দ্রা উপভোগ করে,একটু পরে তাসরীফ বাসে উঠবে্…………তন্দ্রা তাকিয়ে আছে বাসে ওঠার পরই সে বাড়ীতে যাবে ।রাস্তার মাঝখানে তাসরীফ দাঁড়ানো……।তন্দ্রা লুকিয়ে লুকিয়ে তাকে অনুসরণ করে।বাস আসতে থাকে,পেছনেই রয়েছে, একটা বাস খুব দ্রুত বেগে আসছে…… আর তাসরীফ দাঁড়িয়ে আছে রাস্তার ঠিক মাঝে…………
-ক…কে!
-নিঁচে আয় তোর খবর আছে আজকে
-আসি আম্মা
ঘোর কাটেনা ………।কী যেন ভাবছিলো সে,মনে করতে পারেনা
-এতো রাতে ছাদে কী?
-এমনি
-এমনি? না কথা বলতে যাস?
-যার সাথে কথা বলতাম সে নেই।
-তোর বান্ধবের অভাব হয়?পোড়ারমুখী
-মা বাজে কথা বলবেনা,তোমাদের জন্য সব ছেড়েছি,বন্ধু-বান্ধব,প্রেমিক,সবাই,সব্বাই,তাও তোমাদের হয়না!
হঠাৎ তন্দ্রা খেয়াল করে বাধা চুল গুলো আর বাধা নেই সেগুলো খুলে গিয়েছে ,কেউ একজন দানবীয় শক্তিতে চুল ধরে দেয়ালের সাথে পিষে দেয় তাকে,গালটা কেটে যায়,হালকা রক্ত ঝড়ে,তন্দ্রা চিৎকার করে………।।
-কী চাও তোমরা?বলো?তোমাদের জন্য কী করিনি আমি?তোমাদের টাকা লাগবে?আমার রোজগারের টাকা?নাকি আমার মরা লাশ চাই তোমাদের?
তন্দ্রা অবুঝ।সে ভুলে যায় জগতে শক্তিশালী টিকে থাকে।একটা গ্লাস ভাঙার শব্দ হয়,বা হাতের ঠিক নিঁচে হাতের ভেতর কাঁচ ঢুকে যায় আর্তনাদ করে তন্দ্রা ,ছোট ভাইটাকে ওর মা-বাবা নিয়ে আসে মুখ চেপে ধরার জন্যে,বড্ড চেঁচায়,প্রতিবাদ করে মেয়েটা,সেই জন্যে।যে বাবার কোলে চড়ে চলে গিয়েছিলো ৯-১০ বছর সেই বাবা মাটিতে ছুড়ে ফেলে সজোরে,তন্দ্রা জ্ঞান হারায়।
কোনো এক প্রান্তে অনিরুদ্ধ বই নিয়ে অগোছালো পড়ে আছে,
তাসরীফ হয়তো গিটারের ছয় তারের সমন্বয়ে ভীষণ ব্যস্ত,
কেউ হয়তো সদ্যই চুলোয় রান্না বসিয়েছে,
কেউ গুণগুণিয়ে পড়ছে,
কেউ ঘুমোচ্ছে,
জগতে সব কিছু চলছে তার নিজস্ব তালে,
আকাশের এক কোণায় হলদে বিশাল চাঁদটা,সেও যেন আজ কার দুঃখে মলিন,
তন্দ্রার হয়ে সেও হয়তো বলতে চায়,
আমি বাঁচতে চাই,
আমি কোনো অপরাধ করিনি,
কেবল ভালোবেসেছিলাম……………
চলবে…………
-হাই
-কথা বলতে পারি?
-জ্বী,অবশ্যই
-আপনার নাম?
-তন্দ্রা
-কীসে পড়েন?
-ইন্টারমিডিয়েট দ্বিতীয় বর্ষ ।
-ও
-আচ্ছা,আপনার কোনো ছবি নেই কেনো?
-ফেইক আইডি তাই!
-আহা,ক্ষেপছেন যে!আমি তো ফেইক আইডি বলিনি।
-ছবি দেয়া আর কমদামী পণ্যের জন্যে ব্যবসায়ীদের
হাক ছেড়ে ক্রেতা ডাকা আমার কাছে এক জিনিস।
-হুম ,বুঝলাম
-ভালো থাকবেন,আনফ্রেন্ড করে দিচ্ছি………দুঃখিত
-আচ্ছা
-রাত বাজে ৩:০০ টা আপনি ঘুমান না?
-রাতে ঘুমাই না।
-অদ্ভুত।
-হু
-আমার সম্পর্কে প্রশ্ন নেই?
-না
-আমি অনিরুদ্ধ।
-ভালো
-আপনি আমার জুনিয়র,তাইনা?
-তুমি করেই বলেন,ইনফোতে দেয়া আপনি ডিবেটিং করেন!
-এটায় ই পার করলাম সারাজীবন !(দম্ভ নিয়ে)
-শিখাবেন?
এভাবেই শুরু হয় অসম প্রেমের প্রথম পথচলা।তারপর সেই শেখানোটা ,শেখানোতেই আটকে থাকেনি,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হওয়া,দূরালাপনীর বিশেষ একটা অবদান,নাম্বার প্রদান এবং কথা আদান……
তারপর কথার মেলা বসানো……
আগ্রহটা অবশ্য অনিরুদ্ধর ,
তন্দ্রা নির্বিকার।সব সময়ের মতো।
-আচ্ছা তন্দ্রা ,বাসা কোথায় তোমার?কখনো জিজ্ঞেস করিনি।
-(………)এর কাছাকাছি।
-আমারো
-হু
চারকোণা যন্ত্রের পেছনে বসে দুজনে একই মিথ্যা বলে,তারা দুজন হয়ত জানতোই না কাকতালীয় হলেও দুজন একই এলাকার বাসিন্দা,রাস্তার এপার আর ওপার হবে তাদের দূরত্ব।
-ভাইয়া
-হ্যা,বলো
-ভালো আছেন?
-হ্যা,তুমি?
-সব সময় ভালো থাকি
-একটা প্রশ্ন করতে পারি?
-করেন?
-তোমার প্রেমিক,কিংবা বয়ফ্রেন্ড নেই?
-ছিলো
-এখন নেই?
-না
-কতোদিনের?
-এক বছর সাত মাস
-এতো দিন!তা এখন তাহার অনুপস্থিতির কারণ?
-আমি রাখছি,পরে কথা হবে।
মুখের উপর ফোন রেখে দেয়াটা তন্দ্রার স্বভাব।চুপচাপ ছাদে চলে যায় তন্দ্রা।মই দিয়ে ছাদের পানির ট্যাংক টার উপরে উঠে পা ঝুলিয়ে বসে,এখান থেকে পুরো এলাকাটা দেখা যায়,দূরে দাঁড়ানো বিশাল ইমারত গুলো যেন কতো বছরের কতো দিনের কষ্ট ধারণ করে আছে।নীরবে তাকিয়ে থাকে সে।এটা তন্দ্রার প্রিয় জায়গা।মন খারাপের সময় গুলো সে এখানে কাটিয়ে দিয়েছে কখনো সিগারেটের ধোয়ার সাথে,কখনো বৃষ্টির সাথে,কখনো মেঘ মুক্ত আকাশের গোল থালার মতো চাঁদের সাথে।গা এলিয়ে দেয় তন্দ্রা……………তন্দ্রালু ঝাপসা চোঁখে সে পুরনো গল্প দেখে…………
-এই,তন্দ্রা
-কী?
-তাকাও
-পারবোনা,ব্যস্ত আমি
-আরে ,তাকাও তো
-ধুর,কী?হয়েছেটা কী?
-গ্লাসে দেখো
-তো?
-তুমি আর আমি!
-ধুর,তো?
-সুন্দর না?
-আন্ডা……ভাগো
সব সময়কার মতো রাস্তার যে পাশ দিয়ে গাড়ি যায়,তন্দ্রা সে পাশেই হাঁটছে,সামনে পেছনে ,আশে পাশে খেয়াল নেই,একমনে মেঘ দেখে যাচ্ছে………।
-এই তন্দ্রা!
-ক……কী!
-মরতে চাও নাকি?
-না……নাহ
-এভাবে হাঁটছো কেনো তাহলে?
-চুল উড়ছে,একটা অন্য রকম অনুভূতি ও তুমি বুঝবেনা।
-চুল শুদ্ধ তোমায় উড়িয়ে নিয়ে যেতো ,যত্তসব
টেনে হিচড়ে তন্দ্রা কে তাসরীফ এগিয়ে নিতে থাকে,সব সময় এমন ভাবেই আগলে রাখে।যেন কোনো কিছুই তাকে স্পর্শ করতে না পারে।
-এই নাও,স্যরি দেরি হয়ে হলো।
-কী?
-আইসক্রিম
-হিহিহি
-চকলেট ফ্লেভার,দাঁত না দেখিয়ে খাও
তাসরীফের বদ অভ্যাস হলো তন্দ্রাকে বাড়ি পৌছে দেয়া,তন্দ্রাও কিছু বলেনা,ওর মাতব্বরি তন্দ্রা উপভোগ করে,একটু পরে তাসরীফ বাসে উঠবে্…………তন্দ্রা তাকিয়ে আছে বাসে ওঠার পরই সে বাড়ীতে যাবে ।রাস্তার মাঝখানে তাসরীফ দাঁড়ানো……।তন্দ্রা লুকিয়ে লুকিয়ে তাকে অনুসরণ করে।বাস আসতে থাকে,পেছনেই রয়েছে, একটা বাস খুব দ্রুত বেগে আসছে…… আর তাসরীফ দাঁড়িয়ে আছে রাস্তার ঠিক মাঝে…………
-ক…কে!
-নিঁচে আয় তোর খবর আছে আজকে
-আসি আম্মা
ঘোর কাটেনা ………।কী যেন ভাবছিলো সে,মনে করতে পারেনা
-এতো রাতে ছাদে কী?
-এমনি
-এমনি? না কথা বলতে যাস?
-যার সাথে কথা বলতাম সে নেই।
-তোর বান্ধবের অভাব হয়?পোড়ারমুখী
-মা বাজে কথা বলবেনা,তোমাদের জন্য সব ছেড়েছি,বন্ধু-বান্ধব,প্রেমিক,সবাই,সব্বাই,তাও তোমাদের হয়না!
হঠাৎ তন্দ্রা খেয়াল করে বাধা চুল গুলো আর বাধা নেই সেগুলো খুলে গিয়েছে ,কেউ একজন দানবীয় শক্তিতে চুল ধরে দেয়ালের সাথে পিষে দেয় তাকে,গালটা কেটে যায়,হালকা রক্ত ঝড়ে,তন্দ্রা চিৎকার করে………।।
-কী চাও তোমরা?বলো?তোমাদের জন্য কী করিনি আমি?তোমাদের টাকা লাগবে?আমার রোজগারের টাকা?নাকি আমার মরা লাশ চাই তোমাদের?
তন্দ্রা অবুঝ।সে ভুলে যায় জগতে শক্তিশালী টিকে থাকে।একটা গ্লাস ভাঙার শব্দ হয়,বা হাতের ঠিক নিঁচে হাতের ভেতর কাঁচ ঢুকে যায় আর্তনাদ করে তন্দ্রা ,ছোট ভাইটাকে ওর মা-বাবা নিয়ে আসে মুখ চেপে ধরার জন্যে,বড্ড চেঁচায়,প্রতিবাদ করে মেয়েটা,সেই জন্যে।যে বাবার কোলে চড়ে চলে গিয়েছিলো ৯-১০ বছর সেই বাবা মাটিতে ছুড়ে ফেলে সজোরে,তন্দ্রা জ্ঞান হারায়।
কোনো এক প্রান্তে অনিরুদ্ধ বই নিয়ে অগোছালো পড়ে আছে,
তাসরীফ হয়তো গিটারের ছয় তারের সমন্বয়ে ভীষণ ব্যস্ত,
কেউ হয়তো সদ্যই চুলোয় রান্না বসিয়েছে,
কেউ গুণগুণিয়ে পড়ছে,
কেউ ঘুমোচ্ছে,
জগতে সব কিছু চলছে তার নিজস্ব তালে,
আকাশের এক কোণায় হলদে বিশাল চাঁদটা,সেও যেন আজ কার দুঃখে মলিন,
তন্দ্রার হয়ে সেও হয়তো বলতে চায়,
আমি বাঁচতে চাই,
আমি কোনো অপরাধ করিনি,
কেবল ভালোবেসেছিলাম……………
চলবে…………
Comments
Post a Comment