ঐ নতুনের কেতন ওড়ে,বিজয় নিশান আকাশ পানে।

আমাদের মনটাকে যদি বাহির থেকে পড়া যেত,যদি দেখা যেত,যদি বোঝা যেত সম্ভবত এত সমস্যার আবির্ভাব হতো না কখনো। তার থেকেও বড় সমস্যা আমরা মানুষিক ভাবে দুর্বল। হতাশা প্রবণ।আত্মপ্রত্যয়ী নই।দৃঢ়চেতা নই।আমরা বুঝিনা আমাদের জীবন আসলেও কত মূল্যবান। আমরা খুব অল্পতেই মুষড়ে পড়ি।আত্মহত্যা করি,নেশা করি।সর্বোপরি ভবিষ্যৎ জলাঞ্জলি দিয়ে ভাগ্যদেবতার গলায় ঝুলে জীবন পার করার নিমিত্তে বসবাস করি।আর আমাদের ইন্ধন জোগাতে কত কিছুই ওত পেতে থাকে!

সমাজ একটি ছেলেকে বলে....

সমাজ:তুমি ধনী?
ছেলে:না তবে সুখী।

সমাজ:তুমি উচ্চবংশীয়?
ছেলে:না,তবে সুখী।

সমাজ:তোমার উচ্চতা কেমন?
ছেলে:তেমন না,কিন্তু...

সমাজ:তোমার পরিবার কেমন?
ছেলে:যেমন হোক,আমি সুখী।

সমাজ:তুমি কত টাকার মালিক?
ছেলে:যতই হোক আমি সুখী।

সমাজ:তুমি কি জানো তুমি বেহায়া ছেলে?
-তুমি কি জানো তুমি মূর্খ?
-তুমি জানো তুমি ব্যর্থ?
-তুমি জানো তোমার কোনো গুণ নেই?
-তোমাকে কেউ চায়না।
-তুমি কুলাঙ্গার।
-তুমি কি আত্নহত্যা করলে?

অতঃপর -হায়!ছেলেটি জ্ঞানী ছিলো! ছেলেটি অনেক ভালো ছিলো!মেধাবী ছিলো!আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা করি।তাকে আমাদের প্রয়োজন ছিলো.......

মেয়েদের ক্ষেত্রে সমাজ আরো ভয়ঙ্কর হয়।

-তোমার পিতা ধনী?
-না তবে আমি সুখী।
-তুমি সুন্দরী?
-না তবে সুখী।
-তোমার হাসি সুন্দর?
-না, কিন্তু....
-তুমি কালো!
-তুমি রাত বি রাতে বাড়ি আসো!
-তুমি বেশ্যা...
-তুমি....

অতঃপর এই "জাতি"তার অত্যাধিক কমনীয়তায় গলিত হয়ে গলায় ফাঁশ দেয় আত্মহত্যা করে।মারা যাবার পরে সমাজ বলে, সে ছিলো মেধাবী,বুদ্ধিমতী, জ্ঞানী!

হ্যা এটাই বাস্তব।আমাদের সমাজ গুনীর কদর হয় গুণী "গত" হবার পরে।গুণী হত্যা করে আমরা বলি সে ছিলো "অমুক","তমুক"।

এইযে শুনুন।সমাজের এসব কথা কানে নিয়ে নিজের অর্ধেকটা অনেক আগেই শেষ করেছেন।প্রতিটি মানুষের মাঝেই কিছু অসাধারণত্ব থাকে।দুর্বল ও সবল কে ছাড়িয়ে যেতে পারে।কীভাবে? সবল যে টুকু করছে দুর্বল কেও সেটুকু করতে হবে।আর কত কানে নেবেন এদের গঞ্জনা?
কেউ মূর্খ বললেই আপনি মূর্খ হয়ে যান?কেউ সমালোচনা করা মানেই কি আপনি ঘৃণিত?

জীবন একটা প্রতিযোগিতা। চারপাশেই আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী। কেনো নিজেকে গুটিয়ে রাখবেন?ভাগ্যের ঘাড়ে সব দায়ভার চুকিয়ে রেহাই নিলে জগতের অন্ধকারেই আপনি ঠাই পাবেন,অতঃপর হতাশা,অতঃপর মৃত্যু।

বাধা আসবে।
প্রতিকূলতা থাকবে।
সমাজ আটকাবে।

তবু থামা যাবেনা।চেষ্টা করুন।খুঁজুন। আপনি নিজের দক্ষতাকে খুঁজুন। নিজের পারদর্শীতাকে কাজে লাগান।মন দিন সেটিতে।

৭ বার চেষ্টাকরে গুহায় আটকে থাকা ছোট্ট মাকড়সাও তো উঠে যায় দেয়াল বেয়ে।

সেই রাজা রবার্ট ব্রুচ ও জিতে গিয়েছিলো ৮ বারের বেলায়।

৯ মাস যুদ্ধ করে আমরা কি নিজেদের দেশ কে প্রতিষ্ঠিত করিনি?

ইতিহাস বলে ব্যর্থতা সফলতা এনে দেয়।চেষ্টাই সব।ইচ্ছাই আশার পরিণতি।তবে?চেষ্টা করতে দোষ কি?

সেই বিখ্যাত উক্তি..."ব্যর্থরাই মানুষ, সফলেরা শয়তান"
- হূমায়ুন আজাদ।

আজই শুরু করে দিন।লক্ষ্য অটুট রাখুন,নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন।জয় আপনার,শুধুই আপনার।

Comments